যারা পালিয়ে বিয়ে করেন বা কোর্ট ম্যারেজ করে থাকেন। তু জানা যাক, কোর্ট ম্যারেজ সম্পর্কে আইন কি বলে।
মুসলিম বিবাহ আইনি ভাবে স্বীকৃতি পেতে "The Muslim Marriage and Divorce Registration Act, 1974" কাজী অফিসে বিয়ে রেজিস্ট্রি করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এবং যে বিয়ে করে রেজিস্ট্রি করবেনা তার শাস্তির ব্যবস্থা ও করা হয়েছে এ আইনে যার শাস্তি ২ বছর কারাদন্ড বা ৩ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়। বিয়ে রেজিস্ট্রির পর কাজী অফিসে একটি কাবিননামা বা নিকাহনামা নামক দলিলের সৃষ্টি হয়। এটা বিয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এটি থাকলে বিয়ের আর কোন প্রমাণ লাগেনা। সুতরাং মুসলিম বিয়ের অন্যান্য ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালনের পাশাপাশি কাজী অফিসে বিয়ে রেজিস্ট্রি করে নিতে হবে। কাজী অফিসের বাইরে বিয়ে পড়ালে সে বিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে কাজী অফিসে গিয়ে রেজিস্ট্রি করিয়ে নিতে হবে।
চালাক প্রেমিক মেয়েদের ধোঁকা দেয় কিভাবে জানেন!
একটা ঘরে প্রেমিকাকে নিয়ে গিয়ে হুজুর ডেকে তার পরিচিত দুজন বন্ধুদের সাক্ষী বানিয়ে বিয়ে করে। মেয়ে ও বিশ্বাস করে একসাথে থাকলে কি ? যেহেতু আমরা বিয়ে করেছি। কদিন পর ছেলে তার যাই ইচ্ছা যেরকম ইচ্ছা সেভাবে মেয়েটিকে অবহেলা, নির্যাতন করে। মেয়েটি তখন বিচার, কোর্ট কাচারী দৌড়াই। বাচ্চা চলে আসল আরো সমস্যা। যে বাচ্চা নিয়ে তার সাজানো সুখের সংসারে স্বামীর সাথে সারা বিকেল জুড়ে গল্প করার কথা সে এখন ঝিমায় আইনজীবীর চেম্বারে। তু, মেয়েটি বিপদে পড়ে, আইনি ভাবে প্রতিকার পাইনা এই কারণে যে আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে গেলে বিয়ের প্রমান দেখাতে হয় অর্থাৎ কাবিননামা জমা দিতে হয়। কিন্তু মেয়ে তু বিয়ে রেজিস্ট্রি করেনি, কাবিননামা পাবে কিভাবে। পাঠক বৃন্দরা, প্রশ্ন হতে পারে মেয়েটির বিয়েটা কি হয়নি? আসলে কাজী অফিসে রেজিস্ট্রিবিহীন বিয়ে শরিয়তি বিধান মেনে করলে শরীয়ত সম্মত হবে কিন্তু আইনসম্মত হয়নি। কারণ বাংলাদেশের আইনে বিয়ের রেজিস্ট্রি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শরীয়ত সম্মত বিয়েটি বর্তমানে রেজিস্ট্রি করে নিতে হবে পরবর্তী তে স্বামী স্ত্রী একে অপরের বিরুদ্ধে আইনি সুরক্ষা পেতে চাইলে।
অর্থাৎ রেজিস্ট্রিবিহীন বিহীন বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ হলে তাদের বিয়ের প্রমাণ করা কিংবা অধিকার প্রতিষ্ঠা করা আইনজীবীর পক্ষে দুরূহ হয়ে পড়ে।
কোর্ট মারেজের সুফল বলতে কিছু আছে কি?
হুম, একদিক থেকে এর সুফল আছে। প্রেক্ষাপট যদি এমন হয়, প্রেমিক প্রেমিকা রাজি কিন্তু প্রেমিকার বাবা ঘাড় তেড়া টাইপের লোক। মেয়েকে বাবা কোনভাবেই ছেলের হাতে বিয়ে দিবেনা। এমনকি পালয়ে বিয়ের পর ও বাবা মেয়েকে ছিনিয়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র করে। প্রভাবশালী বাবা কাজী অফিস কে ও ঘুষ দিয়ে কাবিন নামা গায়েব করে দিতে পারে। সেই প্রেক্ষাপট তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে মনে হলে কোর্ট ম্যারেজ করতে পারেন। তবে অবশ্যই বিয়ে পড়ানোর পর রেজিস্ট্রি করেই কোর্ট ম্যারেজ করতে যাবেন। আগে নয়।
কোর্ট ম্যারেজ একটি প্রচার সর্বস্ব নাম। শুনতে খারাপ লাগলে ও সত্যি কথা: সরলা মেয়েদেরকে বিয়ের মোহে আবিষ্ট করে বিয়ে নামের ধোকা মাত্র।
বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে ‘কোর্ট ম্যারেজ’ এর কোন বৈধতা নেই, যদি না কাজী অফিসে কাজী কতৃক বিয়ে রেজিস্ট্রি করা নাহয়। এসব বিষয় জানা থাকলে আপনি অনেক নিরাপদ থাকবেন, আইনি সুরক্ষা পেতে বেগ পেতে হবেনা।
বাস্তবতা হলো:
কোর্ট ম্যারেজের প্রচলিত নিয়ম থেকে দেখা যায় বিয়ের মৌলিক বিষয় গুলোর কোন তুয়াক্কা করা হয় না। শুধুমাত্র ১৫০/-টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেটের কার্যালয়ে গিয়ে হলফনামা করাকে বিয়ে বলে অভিহিত করা হয়। অথচ এ্যাফিডেভিট বা হলফনামা শুধুই একটি ঘোষণাপত্র। আইনানুযায়ী কাবিন রেজিষ্ট্রী সম্পন্ন করেই কেবল ঘোষণার জন্য এফিডেভিট করা যাবে। কিন্তু এ নিয়ম মানা হয় না। তাই এটি বিয়ে নামের একটি পাতানো ফাঁদ ছাড়া কিছুই নয়।
যেকোন আইনি পরামর্শ নিতে আমাদের ফেজবুক পেইজ টি ভিজিট করুন Click here
©লেখাটি লেখক কতৃক সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত
লেখক: শহিদ রাসেল
আইনজীবী, চট্টগ্রাম জজ কোর্ট
5 মন্তব্যসমূহ
এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।
উত্তরমুছুনআমি একজনকে বিয়ে করতে চাই।। যেন পরবর্তীতে কোন সমস্যা না হয় আমাদের
উত্তরমুছুনএই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।
মুছুনpleas help me...
উত্তরমুছুনi want your advice.. plz plz
কোর্ট মেরেজ করেছি কিন্তু আমি আর বিয়ে করতে চাই না ওকে তাহলে কি কোন সমস্যা হবে আমার কাজগ অর কাছে আছে
উত্তরমুছুনIf you have any question, please let me know.